প্রকাশিত হয়েছেঃ বুধবার, ২০ই মে, ২০২০
আয়ারল্যান্ডে একটি দূতাবাস স্থাপন ছিল সময়ের দাবী। এই দাবীটি অনেক আগে থেকেই বাংলাদেশী কমিউনিটির বয়োজেষ্ঠ্য ব্যাক্তিরা করে আসছিলেন। সেই বয়োজেষ্ঠ্য ব্যাক্তিদের প্রায় সকলেই ছিলেন আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।

কিন্তু পরিতাপের বিষয় বাংলাদেশে বি. এন. পি ও জামাত শিবির ক্ষমতায় থাকার কারনে অতীতে বি. এন. পি জামাত শিবির সরকারের কাছ থেকে দূতাবাস স্থাপনের কোন প্রতিশ্রুতি পাওয়া যায়নি। কারণ বি. এন. পি এবং জামাত শিবির কখনোই চায়নি বাংলাদেশ একটি স্বনির্ভর রাষ্ট্রে পরিনিত হোক এবং বাংলার মানুষ বর্হিবিশ্বে তাদের যোগ্যতা দিয়ে মাথা উচু করে দাড়াক।

১৯৭১ সালে জামাত শিবির বিরোধিতা করেছিল বাংলাদেশ রাষ্টের। আজও বি. এন. পি এবং জামাত শিবির ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে, বাংলা ভাষার বিরুদ্ধে এবং জাতির পিতা ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের জ্যেষ্ঠ কন্যা জননেত্রী ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তার পরিবারের বিরুদ্ধে। জামাত শিবির চেয়েছিল উর্দুকে বাংলার রাষ্ট্র ভাষা করতে। এই জামাত শিবির, বি. এন. পি ও তারেক জিয়া সংঘবদ্ধভাবে একাধিকবার চেষ্টা করেছিল জননেত্রী শেখ হাসিনাকে এই পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিতে। বাংলার মানুষ এখনও ভুলো নাই সেই জজ মিয়া নাটকের কথা।

জামাত শিবির ও বি. এন. পি ক্ষমতায় থাকাকালে আমাদের সুপ্রিয় বাংলাদেশ পরপর তিন বার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ান হয়েছিল। বাংলাদেশকে তারা পরিণত করতে চেয়েছিল একটি ব্যর্থ ও সন্ত্রাসী রাষ্ট্রে। কিন্তু বাংলার জনগন তা হতে দেয়নি। বাংলার জনগন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে পরপর তিনবার জননেত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রীর আসনে আসীন করে।

প্রবন্ধের মূল বিষয়ে ফিরে আসি, তথ্য প্রযুক্তিতে আয়ারল্যান্ড বিশ্বে প্রথম শ্রেনীর দেশগুলোর মধ্যে একটি। আয়ারল্যান্ডকে বলা হয় ট্যাক্স হেভেন। এখানে কর্পোরেট ট্যাক্স ১২.৫% হওয়ার কারণে আমেরিকান অনেক কোম্পানীর সদর দফতর রয়েছে আয়ারল্যান্ডে। আমাদের জন্য অত্যন্ত দুঃখের বিষয় আয়ারল্যান্ডের IT Sector -এ বাংলাদেশীদের সংখ্য অতি নগন্য। এদিক থেকে অনেকটা এগিয়ে আছে ভারত। ভারতের পররাষ্ট্রনীতি এবং ভারত সরকারের সাথে আয়ারল্যান্ডের সুসম্পর্কের কারণে ভারত থেকে IT Sector -এ সবচেয়ে বেশি দক্ষ জনশক্তি আসছে আয়ারল্যান্ডে।

আয়ারল্যান্ড প্রবাসী প্রফেসার ডাঃ মোঃ হাবিবে মিল্লাত (মুন্না) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশ দূতাবাস স্থাপনের জন্য। তারই জোড়ালে দাবীর ফলশ্রুতিতে গত ১৭ই মে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এক কেবিনেট মিটিংয়ে তাকে নিশ্চিত করা হয় যে আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে বাংলাদেশী দূতাবাস স্থাপন করা হবে।

এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের মধ্যে আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসেন (বেলাল), আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক রফিক খান বাংলাদেশ কমিউনিটির বিভিন্ন সমস্যা সব সময় তুলে ধরেছেন গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী মহোদয়ের কাছে যখন মন্ত্রী মহোদয়গন আয়ারল্যান্ড সফরে আসেন। এমনকি তারা ব্যাক্তিগতভাবেও দেখা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রীসহ বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রীদের সাথে শুধুমাত্র আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশ দূতাবাস স্থাপনের লক্ষ্যে।

উপরের নেতৃবৃন্দের সাথে একই নৌকার সহযাত্রী হয়েছিলেন জনাব জসিম উদ্দিন আহমেদ। তিনি ডাবলিন থেকে একটি অফিশিয়াল চিঠি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে প্রেরণ করেছিলেন আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশ দূতাবাস স্থাপনের অনুরোধ করে। উক্ত চিঠিতে তিনি আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত অনেক বাংলাদেশীর সম্মতিসূচক স্বাক্ষরও সংযুক্ত করেন। জনাব জসিম উদ্দিন আহমেদ বর্তমানে ডাবলিন আওয়ামী লীগের একজন উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছেন।

আমাদের সকলের আশা খুব শীঘ্রই আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশ দূতাবাস স্থাপন হবে। যদিও গত ১৭ই মে প্রফেসার ডাঃ মোঃ হাবিবে মিল্লাত (মুন্না) ডাবলিন আওয়ামী লীগের ওয়েবসাইট উদ্বোধনের সময় বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে আয়ারল্যান্ডে দূতাবাস স্থাপনে বিলম্ব হতে পারে।

দূতাবাস স্থাপনে বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তার জন্য ইতিমধ্যে ডাবলিন আওয়ামী লীগ সহ আয়ারল্যান্ডের শীর্ষস্থানীয় আওয়ামী নের্তৃবৃন্দ তাদের কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছে। সেই লক্ষ্যে ডাবলিন আওয়ামী লীগের একাডেমিক গ্রুপ আয়ারল্যান্ডে বিভিন্ন ধরনের সম্ভাবনাময় খাতের বিশ্লেশন, জরিপ ও গবেষনা করে একটি গবেষনা পত্র গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে প্রেরণ করবে। উক্ত বিশ্লেশন, জরিপ ও গবেষনায় নিন্মের বিষয়গুলো উল্লেখ থাকবেঃ

  • বাংলাদেশের দক্ষ জনশক্তিকে ইংরেজীতে পারদর্শী করা
  • ব্যবসা-বানিজ্যের সম্ভবনাময় খাত সমূহ সনাক্তকরণ
  • আয়ারল্যান্ডের তথ্য প্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশীদের অংশগ্রহন
  • বাংলাদেশ থেকে (কৃষি, শিল্প, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অন্যান্য) দক্ষ জনশক্তি আনয়নের ধাপগুলো নির্ধারণ
  • বাংলাদেশীদের জন্য ব্রেক্সিটকালীন ব্যবসায়িক সুযোগ সুবিধা নির্ধারণ
  • আয়ারল্যান্ডে অবৈধ হয়ে পরা বাংলাদেশীদের বৈধ করা

আয়ারল্যান্ড থেকে আপনারা কেহ যদি ডাবলিন আওয়ামী লীগের মৌলিক বিশ্লেষণমূলক গবেষনা পত্রে অংশগ্রহন করতে চান অনুগ্রহ করে এই লিংটির মাধ্যমে আপনাদের বিস্তারিত আমাদের নিকট পাঠিয়ে দিন।

নাসির আহামেদ